উন্নয়নবিরোধীদের রুখতে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আজ সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ অপশক্তি, যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, যারা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়, যারা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে, তারা দেশের অশান্তি সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। আমাদের সবাইকে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী নারী বিদ্বেষমূলক যে বক্তব্য দিয়েছে এতে দল বা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটি তার ব্যক্তিগত মন্তব্য হতে পারে। আমাদের দলের বা সরকারের কোনো বক্তব্য বা মন্তব্য না। এ ধরনের বক্তব্য কেন সে দিলো, অবশ্যই আমি বিষয়টা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি ক্রমাগত মনগড়া বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে, যা তাদের দলের কাছেই নেতাদের একদিন জবাবদিহি করতে হবে।
বেগম জিয়া না থাকলে আওয়ামী লীগ না কি থাকবে না, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যে জনগণের মধ্যে হাস্যরসে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ ঠিকই থাকবে, তবে বেগম জিয়া না থাকলে বিএনপি থাকবে কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।
দেশে বিচারব্যবস্থা স্বাধীন নয়, বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা এখন আত্মবিশ্বাস হারানো এক পথভ্রান্ত রাজনৈতিক দল।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ সফলভাবে পালনের লক্ষ্যে ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একযোগে জাতিকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন। ওইদিন সকালে সাভার ও বঙ্গবন্ধু ভবনে আওয়ামী লীগসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মী শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। ১৭ ডিসেম্বর সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে দেশি-বিদেশি অতিথিদের নিয়ে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান হবে। ১৮ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটায় শিখা চিরন্তন থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা করবে আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, শোভাযাত্রায় বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও সাজসজ্জা থাকবে, কিন্তু মানুষের যাতে ভোগান্তি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ব্যানার-ফেস্টুনে বঙ্গবন্ধু, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের চেয়ে কারো কারো ছবি বড় দেখা যায়, এটা করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি দেওয়ার পর কোনো ব্যক্তি বিশেষের ছবি দেওয়া যাবে না। তবে সৌজন্যে নাম দেওয়া যাবে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ সমাপনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে পাড়া-মহল্লায় আলোকসজ্জা করার নির্দেশনা দেন ওবায়দুল কাদের।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলররা।